সুবল সরদার
আমার ভালোবাসার রঙ তুলি দিয়ে রাঙিয়ে তুলেছি আমার মেঘ কন্যাকে । প্রতিদিন সকালে একটা করে কবিতা লিখে তাকে প্রেম নিবেদন করি-
কেমন বলতে পারো বল দেখি-
আমার প্রিয় ফুল তুমি।
তোমার প্রিয় ফুল ?
আমার প্রিয় গান তুমি।
তোমার প্রিয় গান ?
আমার প্রিয় ভালোবাসার রঙ তুমি
তোমার প্রিয় ভালবাসার রঙ?
কি হল পরাণ প্রিয়া ,তোমার প্রিয় ভালবাসার রঙ কি বলতে পারলে না তো। তাই তো আমি পৃথিবী জুড়ে তোমার প্রিয় রঙ খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছি ।
বৈঠা টানি মাঝদরিয়া
তুমি আমি যাব কোন সাগরের ঘাটে !
হেথা হোথা তখন কেউ পাবে না মোদের ঠিকানা।
সে এক মজার দেশে !
থাকবো শুধু দু’জনে।
এইভাবে আলো ছায়ার পথ ধরে হাঁটছি এখন। কল্পনার নানা রঙের গ্ৰন্থি মিলেছে যেখানে । অনন্তকালের পথ ধরে চলছে সে কল্পনার তুলি এঁকে ।
এক চিলতে আলো, এক চিলতে ছায়া, এক চিলতে বৃষ্টি, এক চিলতে সন্ধ্যা , এক চিলতে জীবন,এক চিলতে আশা, এক চিলতে ভালোবাসা,এক চিলতে দেখা, এক চিলতে তোমায় পাওয়া !
স্বপ্নের দেশে ভালোবাসা থাকে আর ভালোবাসার দেশে স্বপ্ন থাকে । ভালোবাসা হয়ে, তুমি যদি ভালোবেসে ধরা দাও কাছে !
চোখ খুলেই তোমাকে দেখি
চোখ বন্ধ করলেই তোমাকে দেখি
তুমি আলো -ছায়া
প্রিয়, তুমি কী সুন্দর হে
তুমি কী সুন্দর !
তুমি মানে মুক্ত হাওয়া
তুমি মনের কথা।
তুমি মানে একরাশ আদর
তুমি মানে একরাশ ভালোবাসা।
এইভাবে তোমাকে প্রতিদিন একটা করে গোলাপী রঙের প্রেমের চিঠি দেবো
সোনালী খামে ঢাকা
চোখের জলে লেখা
সব লিখেও হয়নি লেখা মনের কথা।
একদিন তুমি বললে- বাইশের চোখে পৃথিবী দেখছি এখন । তোমার সেই বাইশের পৃথিবীতে , তোমার সেই রূপের দেশে নাকি আমি কোন রূপকথার গল্প নই । আমি কেবল ঝরা পাতা। আমি তখন বললাম –
তুমি পৃথিবীর বয়সিনী এক নারী। তুমি বাইশে বা তেইশে নেই। রূপ সাগরের ঘাটে ঘাটে রূপ সাগরের হাটে তোমাকে নিয়ে ফেরি করি । তোমাকে নিয়ে গান লিখে মেলায় মেলায় বাউল হয়ে ঘুরে বেড়াবো । কখনো ভাবি আমার জায়গায় যদি তুমি থাকতে আর তোমার জায়গায় যদি আমি থাকতাম ! শহীদ মিনারে উঠে গিয়ে গলা ফাটিয়ে আকাশকে বলে দিতাম- আমার প্রিয়া রঞ্জনা,
তুমি যতোই দাও কেন আমায় গঞ্জনা।
একটি নাম শুধু ব্যঞ্জনা ।
তোমাকে ভালোবাসবো ,
শুধু এইটুকু মোর প্রার্থনা।
আমার এই ধূসর, মরুভূমি জীবনে গোলাপ হয়ে তুমি রাঙিয়ে দাও,মেঘ হয়ে ছায়া দাও, প্রিয়।
আমি প্রতিদিন রাতে স্বপ্ন দেখি নতুন সকালের। কী মিষ্টি সে সকাল!
সকাল বেলার মিষ্টি রোদ্দুর তুমি
বিকেল বেলার স্মৃতি।
কতো কথা আছে জমে
তোমাকে নিয়ে ভাব বলে ।
তোমার জন্য বিক্রি করতে পারি
নদী -পাহাড় -ঝর্ণা- অরণ্য
তোমার জন্যে হবো বন্য ।
ওগো প্রিয়, তোমার জন্যে হবো আমি বন্য।
হেমন্ত এলো,শীত এলো,রোদ মাখা সকাল এলো, শিশির ভেজা ঘাস এলো, তখন শুধু তোমার অপেক্ষায় আমি । তখন সকাল কেমন শিশিরের দেশ হয়ে ওঠে। রঙ বাহারি সকালে সূর্য ওঠে হেসে ।
শরতের মেঘ আকাশের কোণে মেলে না ঠাঁই
ভোরের আকাশে হেমন্ত আসে শিশির ভিজে
শরতের কাছে পাঠায় সই।
শীতের মিঠে রোদ তুমি
শিশির ভেজা ঘাস।
শিউলি ফুলের পরশ আমার
সুকেশী সুবাতাস।
সদ্য ফোঁটা কমল তুমি
পাপড়ি মেলা সুহাস।
পাখির নীড়ের মতো নরম তুলি তুমি
তুষার যেন শুভ্র সুবাস।
তুমি মানে সকাল বেলা
পান্না হীরে মুক্ত মালা।
তুমি মানে অস্তরাগে
পূর্বরাগের ছোঁয়া।
তুমি মানে অনন্ত ভালোবাসা
তোমার সাথে দিবানিশি মিলেমিশে থাকা।
ঝরা ফুলের মতো স্বপ্ন দেখি,
তবুও বাতাসে গন্ধ ঢালি ।
অলির মতো গুনগুন করে
তোমার কানে কানে বলি ,
সাত সমুদ্দুর তেরো নদী পারে,
হৃদয় মাঝে,
তোমাকে লুকিয়ে রেখে কোথায় খুঁজি।
এতো কবিতা লেখার পর যখন তোমার কাছে থেকে কোন উত্তর পেলাম না তখন মনে হয় আমি এক হেরে যাওয়া জীবনের গল্প
নিভে গেছে আমার আলো।
মনে করো আমি এক কুয়াশায় ঢাকা বন্দি প্রভাত
হারিয়ে গেছে আমার জগৎ । ভাঙ্গাচুরা নৌকার মতো ক্ষতবিক্ষত আমার এই জীবন। নদীর স্রোতে চলে এঁকেবেঁকে,কোন ঘাটে তার ঠাঁই নাহি মেলে।
যদি তুমিময় একটা জগৎ থাকত! বালুকা বেলায় তোমার সাথে বসে প্রেমের কবিতা লিখতাম! কী সোহাগে নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ে বালুকাবেলায় কী মায়ায়! তোমার ছোঁয়ায়,তোমার মায়ায় চোখের জলে লিখতাম বিরহ গাঁথা। তুমি তখন বিরহিনী রাই, আমি বিরহ কানাই ।
ফুলের বাসরে তোমার সাথে করিব বাস।
তোমার সাথে বাঁধিব ঘর দিবস রজনী বারোমাস।
ফুলের ঘায়ে মূর্ছা পায়
তোমার আঁখির পরে আঁখি মোর জেগে রয়
তোমার প্রাণে সদা মোর প্রাণ ধায়।
ফুলের গন্ধে অলি যেমন ডানা মেলে
তেমনি তোমার পানে সদা মোর প্রাণ ছুটে যেতে চায় ।
যেমন ফুলের পরাগ মেখে অলির গুনগুনিয়ে যায় তেমনি তোমার ভালবাসার রঙ লেগে আমার হৃদয় রাঙা হয়।
তোমাকে খুব করে ভালোবাসাতে পারি। কিন্তু তুমি রাগ করবে বলে তোমাকে ভালবাসতে পারি না। তোমার ভালবাসার মধ্যে জন্ম -মৃত্যু দুই নিতে পারি। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তুমি ছাড়া আমার আর কিছু নেই। তুমিই প্রেম অপ্রেম। তুমি আমার জগৎ। আমার জগৎ তুমি। তুমি একটা ফুল। এখানে অলি নয় শুধু আমার গুঞ্জন,
তোমাকে করবো আলিঙ্গন।
এমন জগতের হদিস কে পায়!
ওগো প্রিয়, তুমি শুধু সুধাময়
তারপর ! শুধু অবকাশ। অন্তত আকাশের নীচে তুমি আর আমি।
আমি রব নীরবে তোমার প্রতীক্ষায়
নিভৃতে সযত্নে সাজাই তোমায়।
হে প্রিয়, কী অঞ্জলি দিব তোমায় ।
কবিতার মালা গেঁথে সবিনয় নিবেদন ইতি করলাম। আমার এই প্রেমের অর্ঘ্য শুধু তোমার জন্যে ,প্রিয়। তুমি ভালো থেকো।