মানসিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হেসে খেলে দিন যাপন কচিকাঁচাদের

কলকাতা৬মে ২০২৫মানসিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশুদের চিকিৎসা ও তাদের পুবর্বাসনের জন্যে বছর ২৫ আগে সরশুনায় গড়ে ওঠে ‘বেহালা বোধয়ন’ নামে একটি আবাসিক স্কুল ও হোম।
তাদের পঁচিশ বছরে পদার্পণ
উপলক্ষে কলকাতায় অনুষ্ঠিত হল ‘মনন, মমতা ও প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তি বিষয়ে এক অনুষ্ঠান। সুজাতা সদনে এই অনুষ্ঠানে হেসে খেলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটু অন্য ধরনের জীবনের অনুভুতিতে মিশে যান এইসব মানসিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ছেলে মেয়েরা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বালিগঞ্জ শাখার স্বামী দিব্যজ্ঞানানন্দ মহারাজ। তিনি এইসব ছেলে মেয়েদের পাশে থাকার জন্যে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
উপস্থিত ছিলেন,পণ্ডিত মল্লার ঘোষ, বিশিষ্ট শ্রবণ ও বাক্‌ বিশেষজ্ঞ, অডিওলজিস্ট ও স্পিচ-ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজিস্ট মোঃ সহিদুল আরফিন।
এ উপলক্ষে সম্বর্ধনা জানানো হয় বেহালা বোধয়ন স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র গৌরব ঘোষ এবং রবীন সাউ-কে। এছাড়াও সম্বর্ধিত করা হয় তিনজন লেখক অহন সেনগুপ্ত, সৃজন সেনগুপ্ত, ও সৌম্য উপাধ্যায়-কে যাঁরা ভাষার প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন।
বেহালা বোধয়নের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রিক্তা ঘোষ বলেন,
তাদের পঁচিশ বছরের যাত্রাপথে ফিরে তাকালে চোখে জল আসে। সমাজের মূল স্রোতের বাইরে থাকা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের জন্য একটুকু ভালোবাসার আশ্রয় তৈরি করতে গিয়ে কত যে প্রতিকূলতা, কত যে অবহেলা সহ্য করতে হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু আজকের এই আনন্দঘন মুহূর্তে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে আমাদের এতদিনের সংগ্রাম সার্থক হয়েছে।
মোঃ সহিদুল আরফিন বলেন,
এই মঞ্চে এসে আমি গভীরভাবে অনুধাবন করলাম শুধু চিকিৎসা বা থেরাপি নয়, ভালোবাসা, মর্যাদা আর মানুষের মতো বাঁচার অধিকার দেওয়াটাই প্রকৃত পূর্ণ থেরাপি। বেহালা বোধয়নের কাজ শুধু সহানুভূতির দৃষ্টান্ত নয়, এটি আমাদের সমাজের মানবিক বিবেককে নাড়া দেয়।
অনুষ্ঠানের শেষ হয় বেহালা বোধয়নের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশিত এক মনোগ্রাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। তাঁদের গানের সুর, নাচের ছন্দ আর নাটকের ভাষায় মিশে ছিল আত্মপ্রকাশের আনন্দ আর জীবনের সৌন্দর্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *