কলকাতা১১ মার্চ ২০২৫:জন্মের পর থেকে ৩১ বছর ধরে তাতাই যেন এক নীরব জগতে বন্দী ছিল। সে কখনো তার ভাবনা প্রকাশ করতে পারেনি, বলতে পারেনি তার চাহিদা বা স্বপ্নের কথা। ছোটবেলায় অটিজম ধরা পড়ার পর থেকেই কথা বলতে না পারার যন্ত্রণা শুধু তার নয়, বরং তার পুরো পরিবারের। তার বাবা-মা বহু চিকিৎসকের দরজায় কড়া নেড়েছেন, থেরাপির জন্য ছুটেছেন এক শহর থেকে আরেক শহরে। কিন্তু বহু প্রচেষ্টার পরেও তার মুখে কোনো শব্দ ফোটেনি।
একদিন তার বাবা সৌমেন উপাধ্যায়, তার আঙুল ধরে এক এক করে কী বোর্ডের সুইচ-প্রেস করাতে থাকেন। ধীরে ধীরে গঠিত হতে লাগল শব্দ, তারপর বাক্য, তারপর সম্পূর্ণ ভাবনা।
এবং তখনই
তাতাই শুধু যোগাযোগই করতে শিখল না, সে লিখে ফেলল তার এতদিনে জমে থাকা কথা।
প্রকাশিত হল তার প্রথম বই
‘তাতাইয়ের গল্প’।
এই বই প্রকাশ করে সোমবার কলকাতার লেকটাউনে এক অনুষ্ঠানে তাতাইকে সংবর্ধিত করার পাশাপাশি ‘অল্টারনেটিভ অগমেন্টেটিভ কমিউনিকেশন’ (AAC) সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয় মানুষের মধ্যে।
সংগঠনের অন্যতম সদস্য এবং একজন অটিস্টিক সন্তানের মা, সুমিত্রা পাল বক্সী বলেন,প্রত্যেকটি শিশুর মধ্যেই অসাধারণ কিছু করার ক্ষমতা আছে। আমাদের শুধু বিশ্বাস রাখতে হবে এবং তাদের পাশে থাকতে হবে।
বিশিষ্ট শ্রবণ ও বাক্ বিশেষজ্ঞ, ড. মোঃ সহিদুল আরেফিন বলেন,
অনেক বাবা-মা ভয় পান যে, অল্টারনেটিভ কমিউনিকেশন ব্যবহার করলে হয়তো তাদের সন্তান আর কখনো কথা বলা শিখবে না। কিন্তু এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এটাও কথা বলা বা ভাব প্রকাশের জন্য একটি সহজ ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম বলে তিনি জানান।
এক নীরব কণ্ঠের কথা,মৌনতাকে শব্দে রূপ দেওয়া তাতাইয়ের গল্প
