কলকাতা ২৮শে জানুয়ারি ২০২৫ :কবিতা এক শুদ্ধ মনের ফসল। কবি মানসের প্রতিফলন কবির কবিতায়। সন্তানের সঙ্গে জননীর সম্পর্ক যেমন বায়োলজির, তেমনি কবির সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক ইনটেলেকটর। কবি হলেন সাধারণের চেয়ে গভীর অনুভূতির সামগ্রিক মানুষ। এই সৃষ্টির জন্য কবিকে সাধারণ মানুষের কাম্য অনেক সুখ বর্জন করতে হয়। ঘরে বাইরে সকলেই কবিকে সংসারের অনভিজ্ঞ আত্মভোলা অবাস্তব মানুষ বলে গণ্য করে থাকে। আর তখনই কবি সমাজ ও সংসারের দগদগে ঘা থেকে নিঃসৃত চটচটে রক্তের কালিতে লেখেন —–
আমার ভুলে ফুটবেই ফুটবে লক্ষহীরার ফুল
হয়তো বা মরণের পরে
একফালি চাঁদ হয়ে দিয়ে যাবে আলো
কোমল গান্ধারে ।
কবিতা শুধু কবির সম্পত্তি নয়, তাতে পাঠকেরও অধিকার সমভাবে বর্তমান । তবে ইহা সত্য যে, রোমান্টিকতার স্পর্শ ছাড়া কেবল মনন আর বুদ্ধি দিয়ে কবিতা কেন কোন সাহিত্য সম্ভব নয়। কবি দিব্যেন্দু সাহার কবিতায় ধরা পড়ে জড়ের সঙ্গে চৈতন্যের সংগ্রাম। আপেক্ষিক সত্যের মধ্যে দিয়ে পারমার্থিক সত্যে পৌছানোর তীব্র বাসনা। পঞ্চভূতের শরীরে ষড়রিপুর অন্যতম বহিঃপ্রকাশ আবেগের তীব্রতা, বাসনা পুরণ না হওয়ার অলজ্জিত হাহুতাশ কবির ভালোবাসার রত্নাবলী, ভেনাস, অনন্যা , অন্তর্বাসের হুক, হে প্রেয়সী, সন্ধিক্ষণ
ইত্যাদি বহু প্রেমের কবিতায় বিশেষভাবে ধরা পড়ে।
এরপর মনের সাতটি স্তরের একটা একটা করে স্তর ভাঙতে ভাঙতে মৃত্যুঞ্জয়ী হওয়ার সাধনায় কবি লিখলেন —
আমার বদ্ধআত্মা বোধিবৃক্ষতলায়
একবাটি পায়েস হাতে যদি একবার আসতে
সুজাতার বেশে
আমার সমস্ত বাসনা শেষ করে দিতাম
বীতকাম সহস্রারে ।
মৃত্যুঞ্জয়ী না হওয়ার যন্ত্রণাবোধ —- সনাতন অমৃতের প্রতি কবির যে তৃষ্ণা — এ আর এক চরম রোমান্টিকতা। এই যন্ত্রণাবোধ থেকেই কবি বলে ওঠেন —-
মৃত্যুমুকুট ছুঁড়ে ফেলি অদ্বৈতসাগরে
নিভে যাক ভবচক্রের চিতা নির্বাণ আগুনে ।
—– এই চরম রোমান্টিকতার অভিব্যক্তি কবির “প্রেম বিরহ বিষণ্ণতা মৃত্যু ” কাব্যগ্রন্থের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত।
মৃত্যু তুমি পাবে না আমায়
আমি যে জন্ম-মৃত্যুহীন নিরঞ্জন সত্ত্বা ।বইটি পাওয়া যাবে কলকাতা ২০২৫ বইমেলার ৬০৪ নং স্টলে হৃদয়ের কথা প্রকাশনীতে।
প্রকাশিত হলো দিব্যেন্দু সাহার নতুন বই -প্রেম বিরহ বিষন্নতা মৃত্যু
