সৃজনশীলতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি তথ্যচিত্র ‘কুমোরটুলির গল্প’ –

আজ কলকাতার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলন। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো তথ্যচিত্র ‘কুমোরটুলির গল্প’–এর প্রদর্শনী। তথ্যচিত্রটির পরিচালক সমীর সমু সাংবাদিকদের জানান, “এই কাজটি শুধুমাত্র একটি তথ্যচিত্র নয়, এটি মাটির শিল্পে বাঙালির তিন শতকের ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সৃজনশীলতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।”

তথ্যচিত্র ‘কুমোরটুলির গল্প’ দর্শকদের নিয়ে যায় আঠারো শতকের শেষভাগে, যখন ভিক্টোরিয়া ভারতের ‘রানি’ হন এবং ওয়েলেসলি রাজভবনের তোরণে বসানো হয় কেশর দোলানো সিংহের মূর্তি—যা ছিল টিপু সুলতানের বাঘের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ শাসকের ঔদ্ধত্যের প্রতীক। পরিচালক জানান, এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকেই বাঙালির প্রতিমা নির্মাণে ‘সিংহ’-এর প্রতীকী রূপ খুঁজে পাওয়া যায়—যা এক অর্থে ছিল পরাজিত জাতির নীরব প্রতিবাদ ও আত্মসম্মানের প্রকাশ।

১৭ মিনিটের এই তথ্যচিত্রে কুমোরটুলির শিল্পভূমির তিন শতকের বিবর্তন, শিল্পীদের আর্থিক সংগ্রাম, মর্যাদার লড়াই এবং ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার দৃঢ় সংকল্প ফুটে উঠেছে নতুন এক ভিজ্যুয়াল ভাষায়।

চিত্রটির ভাষ্যপাঠে আছেন ড. জয়ন্ত গুপ্ত, সঙ্গে ত্রিদিব ভট্টাচার্যের কবিতা। সংগীত ও আবহের সঙ্গে আধুনিক গ্রাফিক্সের সংমিশ্রণে কুমোরটুলির ইতিহাস যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে পর্দায়। বিশেষত শেষ দৃশ্যে প্রতিমা বিসর্জনের অনবদ্য ভিজ্যুয়াল গ্রাফিক্স দর্শকদের এক চূড়ান্ত সংবেদনায় পৌঁছে দেয়।

পরিচালনা ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সমীর সমু। প্রযোজনায় SA Entertain, প্রযোজক মিত্রাণি বিশ্বাস। বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন ড. রত্না গুপ্ত। কণ্ঠ দিয়েছেন অরুণিমা ভট্টাচার্য, শর্মিষ্ঠা ঘোষ ও ঈশিতা সাহা। ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ও অডিও প্রোডাকশনে ছিল Studio Acoustic ও SA Visual Studio। অভিনয়ে ছিলেন তিতলি, বাবান ও অন্যান্য শিল্পীরা।

তথ্যচিত্রটি আগামী সপ্তাহে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মঞ্চে ও ফিল্ম ফেস্টিভ্যালএ প্রদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *