• পশ্চিমবঙ্গবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ভারতীয় রেলের আরও এক সামাজিক পরিকাঠামো সৃষ্টির পদক্ষেপ
কলকাতা, ৫ অক্টোবর, ২০২৫:
                       পূর্ব রেলের শিয়ালদহ বিভাগের অন্তর্গত রানাঘাট – বনগাঁ রেলপথ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থাপনকারী রেলপথ। এই রেলপথটি বনগাঁ স্টেশন (যা আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিকটে অবস্থিত) থেকে শিয়ালদহ–কৃষ্ণনগর মূল লাইনের সঙ্গে যুক্ত, যা পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে দ্রুত ও সহজ সংযোগ প্রদান করে।
এই রুটে অবস্থিত বিভিন্ন স্টেশন যেমন Cooper’s Halt, Naba Raynagar Halt, Gangnapur, Majhergram, Akaipur Halt, Gopalnagar এবং Satberia — এসব অঞ্চলের মানুষ Double লাইন সম্পন্ন হলে আরও নির্বিঘ্নভাবে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অংশের সঙ্গে এবং দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।
       রানাঘাট–বনগাঁ Double লাইন প্রকল্পের (দৈর্ঘ্য ৩২.৯৩ কিমি) জন্য রেলওয়ে বোর্ড ₹৩৯৬.০৪ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছে, যা প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
       এই Double লাইনের কাজের আওতায় মোট ৯টি স্টেশন ও ২টি লিমিটেড হাইট সাবওয়ে (LHS) নির্মাণ করা হবে—একটি রানাঘাট ও মাঝেরগ্রাম স্টেশনের মধ্যে এবং আরেকটি Majhergram ও Gopalnagar স্টেশনের  মধ্যে।
            রানাঘাট জংশন শিয়ালদহ–কৃষ্ণনগর–লালগোলা মূল লাইনে অবস্থিত, আর বনগাঁ জংশন শিয়ালদহ/কলকাতা–দমদম–বনগাঁ–পেট্রাপোল (বাংলাদেশ সীমান্তের নিকটে) লাইনে অবস্থিত। বর্তমানে এই দুই জেলার প্রান্তিক অঞ্চলে থাকা স্টেশনগুলি একক লাইনে সংযুক্ত। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও দ্রুততর লজিস্টিক ও যাত্রী পরিবহনের চাহিদা মেটাতে এখন Double লাইনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে। সম্প্রতি রানাঘাট থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত বনগাঁ হয়ে (রানাঘাট–বনগাঁ রুটে) এসি ইএমইউ লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে, যা যাত্রী সেবাকে আরও উন্নত করেছে। Double লাইন সম্পন্ন হলে এই অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেলের প্রচেষ্টা আরও বেগবান হবে।
                  বর্তমানে এই রেলপথের ধারণক্ষমতা ১১৪% ব্যবহৃত হচ্ছে, ফলে Double লাইন তৈরি হলে ট্রেন চলাচলে কোনো বিলম্ব বা ক্রসিংজনিত সমস্যা থাকবে না। এর ফলে পণ্য ও যাত্রী উভয় ট্রাফিকের গতি বৃদ্ধি পাবে। Double লাইনের ফলে অতিরিক্ত ০.৮৮ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহন (MTPA) এবং প্রতিদিন উভয় দিক মিলিয়ে আরও ১০ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে, যার মাধ্যমে রেলের অতিরিক্ত আয় হবে ₹৮.৬৬ কোটি।
                এই Double লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এলাকাবাসীর জীবনযাত্রায় সহজতা আসবে, স্থানীয় জনগণের জন্য দ্রুত ও নির্বিঘ্ন যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলের সামাজিক পরিকাঠামো আরও মজবুত হবে।
		
