কলকাতা : একেই দুঃখের জীবন। তার ওপর যদি নেমে আসে বিভীষিকা। যে কাজ দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিত পরিবারের মুখে সেই কাজ একদিন অভিশাপ হয়ে নেমে আসবে তাদের জীবনে , কেউ ভাবতে পারেনি। বহু বছর আগের কথা কয়লার খনিতে কাজ করতেন ৫০০ জন গ্রামবাসী। যেটুকু মজুরি পেতেন তাতেই চলে যেত তাদের। একদিন কর্মরত অবস্থায় তাদের জীবনে নেমে আসলো অভিশাপ। খনিতে যখন প্রায় ১০০ শ্রমিক ঠিক তখন হঠাৎ করেই নামে ধস। কিছু শ্রমিক নিজেদের জীবন বাঁচাতে পারলেও সিংহভাগই চাপা পড়ে যায় সেই ধসে।
অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর কয়েকজনের লাশ পাওয়া গেলেও বাকিদের কিন্তু কোন ভাবেই হদিস পাওয়া যায়নি। এভাবে ধ্বংসস্তূপ অবস্থায় বহুদিন পড়ে থাকার পর সেই খনিকে আবার নতুন করে শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেই ঘটে আসল ঘটনা। শোনা যায়, নতুন করে আবার সেই খনিটি শুরু হলেও সেখানে যারা কাজ করতেন তারা সম্মুখীন হন বিভিন্ন ভৌতিক ঘটনার। অনেকের কথায় যারা বিপর্যয়ে মারা গেছেন সেখানে তাদের অবয়ব দেখা গেছে । আবার অনেকে সেখানে বিভিন্ন মানুষের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন, তার সাথে চিৎকার, আর্তনাদ ।
পরবর্তীকালে এই বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকরা খনির ভেতরের প্রবেশ করেন। কিন্তু তারা খনির ভেতর থেকে ফিরে আসেননি, তাদের খোঁজও পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের মুখে শোনা যায় রাতের দিকে সেই খনি থেকে শোনা যায় বিকট শব্দ এবং আগুনের শিখা দেখতে পাওয়া যায়।
এরপর, ধীরে ধীরে কমতে থাকে এই খনিতে শ্রমিকের সংখ্যা। তারপরে এই খনি পরিতক্ত হয়ে পড়ে। পরিচিত হয় অভিশপ্ত কয়লার খনি নামে । অভিশপ্ত এই কাল্পনিক খনির অবয়ব তুলে ধরেছে ২০২৫ সালের কালীপুজো প্যান্ডেলের মাধ্যমে কুঁদঘাট পূর্ব পুটিয়ারি যুব সম্মিলনী ক্লাব। এবারে তাদের ৫৩ তম বর্ষ। মন্ডপ সাজানো হচ্ছে কয়লার খনির আদলে। সেখানে দর্শকরা অনুভব করতে পারবেন বেশ কিছু ভৌতিক ঘটনা।
মন্ডপের ভেতরে দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন বেশ কিছু অতৃপ্ত আত্মা নিজেদের মুক্তির জন্য মায়ের আরাধনা করছে। পুরনো কয়লার খনির ধ্বংসস্তূপ এর একটা চিত্র তুলে ধরা হবে দর্শকদের সামনে। পরিকল্পনা এবং ভাবনা- বাবাই সাঁপুই, সুবল সমাদ্দার, এবং ভোলা পাল।
পুজো কমিটির সহ সম্পাদক শুভঙ্কর বিশ্বাস জানান, “ আমারা প্রতি বছরই মানুষের কাছে নতুন কিছু তুলে ধরতে চাই। আমাদের এই উদ্যোগকে দর্শনার্থীরাও খুব ভালো ভাবে স্বাগত জানান। এই বছরও আমরা অভিনবত্ব তুলে ধরছি।“

