রাভশানের সঙ্গে ড্র দিয়ে এএফসিরঅভিযান শুরু করল মোহনবাগান

সুদীপ্ত ভট্টাচার্য

কলকাতা ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ :বুধবার যুবভারতীতে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিল মোহনবাগান সুপার জায়ন্ট। প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তানের ক্লাব রাভশান এফসি। স্কোর লাইন শূন্য -শূন্য। কিন্তু এইরকম ম্যাচের হওয়ার কথা ছিল না বুধবারের ম্যাচে। একের পর এক সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে খলনায়ক হয়ে উঠলেন দিমিত্রি, কামিন্স ও লিস্টনরা। একবার নয়, পর পর তিনটি সুযোগ হাতছাড়া করলেন তাঁরা। না হলে ম্যাচের স্কোর লাইন আজ অন্যরকম হতো।

আগের দুটো টুর্নামেন্টে এগিয়ে থেকেও জয় হাতছাড়া হয়েছে মোহনবাগানের। তাই এএফসির প্রথম ম্যাচে নিজের পরিকল্পনার বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন বাগান কোচ। এদিন তিন ডিফেন্ডারের বদলে ডিফেন্ডারে দল সাজান তিনি। রডরিগেজের চোট থাকায় টমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন দীপেন্দু। দুই সাইডব্যাকে ছিলেন আশিষ ও শুভাশিস। মাঝমাঠে সাহাল, টাংরি আর অনিরুদ্ধ থাপার সঙ্গে ফরোয়ার্ডে দিমি, কামিংন্স এবং মনবীর।

ম্যাচের শুরু থেকে দুই দলই নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণে আশার পরিকল্পনা করলেও তাতে লাভের লাঢ় কিছু হয়নি। বরঞ্চ দুই দলের এই একঘেয়েমি ফুটবল দেখতে দেখতে বিরক্তৈ ঝড়ে পড়ছিল গোটা গ্যালারি জুড়ে। এদিকে বাগানের দুই অজি বিশ্বকাপার নিয়ে হোম ওয়ার্ক যে যথষ্ট পরিমাণে করে এসেছিলেন তাজিক কোচ তার প্রমাণও মিললো হাতে নাতে। নিজেদের মাঝমাঠে লোক বাড়িয়ে কামিন্স এবং দিমিকে জোনাল মার্কিং -এ আটকে দিতেই আটকে গেল মোহনবাগানের যাবতীয় পরিকল্পনা।

তার মধ্যে‌ বেশ কয়েকবার প্রতি আক্রমণের উঠে এসে সবুজ মেরুন গোল‌বক্সে আক্রমণ শানায়‌ রাভশান এফসি। ২৬ ও ৫৩ মিনিটে দুবারই বাগান‌ রক্ষণে পৌঁছে গিয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন রাভশান অধিনায়ক। প্রথমবার বিশাল রক্ষাকর্তা হয়ে উঠলেও দ্বিতীয়বার বল‌‌ বাইরে মারেন তিনি।

এরপর দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর প্ল্যান বি প্রয়োগ‌ করেন ‌বাগান কোচ। আর তাতেই একঘেয়েমি ফুটবল থেকে কিছুটা নিস্তার পান মাঠে উপস্থিত সকলে। অনিরুদ্ধ থাপা আর সাহালের জায়গায় লিস্টন ও আপুইয়া মাঠে নামতেই চেনা ছন্দে ফিরতে থাকে বাগান ব্রিগেড।‌ তৈরি হয় একের পর এক সুযোগও। যা দেখে আশায় বুক বাঁধতে থাকেন সমর্থকরা। ৭৫ মিনিটে আপুইয়ার ঠিকানা লেখা পাস থেকে কামিন্স যে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। অজি তারকার এই গোল মিস দেখে সাইড লাইনের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কোচ মোলিনাও মাথায় দিতে বাধ্য হন।

এই সহজ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরই গোলের গন্ধ‌ পেতে ঝড় তুলতে শুরু করেন দিমি, কামিন্স, লিস্টনরা। ৭৭ মিনিটে আবারও জোড়া পরিবর্তন করেন বাগান কোচ। টাংরি ও মনবীরকে তুলে মাঠে নামান তাঁর দলের মাঝমাঠের সেরা অস্ত্র গ্রেগ স্টুয়ার্টকে। তাঁর সঙ্গে মাঠে আসেন তরুণ অভিষেক সর্যবংশী। এরপরও গোল করার আরও সহজ সুযোগ পেয়েছিল মোহনবাগান। কিন্তু দিমি, কামিন্স, লিস্টনরা সে সুযোগও হেলায় হাতছাড়া করলেন। ফলে যা হওয়ার তাই হল। এক পয়েন্ট নিয়েই খুশি থাকতে হল দুই দলকে।

ম্যাত শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাগান কোচ বলেন, দলের খেলায় তিনি খুশি। আর আরও বেশি খুশি এই কারণে যে, আজকে তাঁর ডিফেন্স ক্লিনচিট রাখতে পারায়। দিমি, কামিন্সরা সহজ সুযোগ নষ্ট করলেও তাঁদের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন মোলিনা। এদিনও সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ধৈর্য না হারিয়ে আমাদের পাশে থাকুন। দল নিশ্চয়ই সাফল্য পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *