কলকাতা, ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৪: উদ্ভাবনের সঙ্গে বধির শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে কথা বলার সমন্বয় ঘটানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হিসাবে এভারেডি ইন্ডাস্ট্রিজ অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী ঋতাভরী চক্রবর্তীর সঙ্গে হাত মেলাল। এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে চালু করা হল এভারেডির সাইরেন টর্চ – এমন এক রূপান্তরকারী সমাধান, যা আইডিয়াল স্কুল ফর দ্য ডেফ-এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্রেফ কাজের জিনিসের চেয়ে অনেক বেশি। এই যৌথ উদ্যোগের লক্ষ্য হল বধির শিশুদের এমন একটা সরঞ্জাম দিয়ে সক্ষম করে তোলা যা তাদের নিরাপত্তা বাড়ায় এবং অল্প বয়স থেকেই নিরাপত্তার বোধ দেয়। ফলে তারা জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হওয়ার আত্মবিশ্বাস পায়।
বধির ব্যক্তিরা প্রায়শই এমন অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন যা অন্যদের সামলাতে হয় না। যেমন সামাজিক নিয়মকানুন মেনে চলার অসুবিধা এবং নিজের পরিপার্শ্বে সুরক্ষিত বোধ করা। এর প্রতিক্রিয়ায় এভারেডির সাইরেন টর্চ সবকিছু আমূল বদলে দেওয়ার মত একটা প্রোডাক্ট। এটা নির্দিষ্টভাবে ডিজাইন করা হয়েছে বিভিন্ন বিপন্ন গোষ্ঠীর মানুষের চারদিকে সুরক্ষা বলয় তৈরি করার জন্য। বিপদে পড়লে সাইরেন টর্চের ব্যবহারকারী এর সঙ্গে যুক্ত কী চেন ধরে টানলে 100dbA তীব্রতার অ্যালার্ম সজোরে বেজে ওঠে। এর ফলে নিশ্চিতভাবে যে কোনো বিপন্ন মানুষ সহজেই অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন এবং সাহায্য চাইতে পারেন। বধির শিশুদের জন্য এই সরঞ্জাম এক উদ্ভাবনীমূলক সমাধান হিসাবে কাজ করে, যাতে নিরাপত্তা সম্পর্কে নীরবতা দূর করা যায়। জিনিসটা হয়ে ওঠে ক্ষমতায়নের দৃষ্টান্ত। ফলে তারা রোজকার জীবন কাটাতে গিয়ে আরও নিরাপদ বোধ করে এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
এই অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী, ১৬ বছর বয়স থেকে আইডিয়াল স্কুল ফর দ্য ডেফ-এর ৮৪ জন শিশুর ফস্টার অভিভাবক ঋতাভরী চক্রবর্তী বলেন “এই ছেলেমেয়েদের ফস্টার গার্ডিয়ান হওয়া আমার জীবনের সবথেকে তৃপ্তিদায়ক অভিজ্ঞতা। এদের কী মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তা আমি দেখেছি। কিন্তু এটাও দেখেছি যে এদের নমনীয়তা এবং শক্তি কী অবিশ্বাস্য। সাইরেন টর্চ কেবল একটা সরঞ্জাম নয়। এটা কথা বলতে না পারা সত্ত্বেও ওদের গলা তোলার শক্তি দেবে। আমি এমন একটা উদ্যোগের অংশ হতে পেরে দারুণ আনন্দিত যেটা ওদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং ওদের বড় বড় স্বপ্ন দেখতে উৎসাহ দেবে, কারণ ওরা জানবে যে ওরা সুরক্ষিত।”
অনির্বাণ ব্যানার্জি, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড এসবিইউ হেড (ব্যাটারিজ অ্যান্ড ফ্ল্যাশলাইটস), এভারেডি ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্ডিয়া লিমিটেড, বললেন “এভারেডিতে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হল এমন সব প্রোডাক্ট উদ্ভাবন করা যেগুলো সমাজের সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন মেটায়। সাইরেন টর্চ সেই দায়বদ্ধতার এক প্রমাণ। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল বিপন্ন গোষ্ঠীগুলো যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় সেগুলো দেখা এবং এমন সমাধান জোগানো যা থেকে আমাদের পরিচিতি ‘ব্র্যান্ড উইথ আ পারপাস’-এর প্রতিফলন হয়। আমরা আশা করছি ঋতাভরী চক্রবর্তীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সকলের জন্যে, বিশেষ করে যেসব গোষ্ঠী প্রায়শই বিপন্ন হয়ে পড়ে তাদের জন্যে, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারব। সাইরেন টর্চ একজন ব্যক্তিকে গলা তোলার এবং সাহায্য চাওয়ার সুযোগ দেয়, এমনকি এমন অবস্থাতেও, যখন তারা একা বোধ করতে পারে। আমরা এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে গর্বিত। এতে শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে এবং তারা ভবিষ্যতের জন্য সক্ষম হয়ে উঠবে।”
এভারেডি সাইরেন টর্চে একটা শক্তিশালী ১০০ ডেসিবেল অ্যালার্ম এবং একটা উজ্জ্বল ফ্ল্যাশলাইট রয়েছে। এগুলো ডিজাইন করা হয়েছে রোজকার জীবনে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বৃদ্ধি করতে। যেসব বধির ব্যক্তির প্রথাগত অন্যকে ডাকার পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার অসুবিধা আছে, তাদের জন্য সাইরেন টর্চ সাহায্য চাওয়ার এক নির্ভরযোগ্য পথ। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এভারেডির লক্ষ্য কেবল বিপন্ন গোষ্ঠীগুলোর প্রয়োজন মেটানোই নয়, নিরাপত্তা ও অন্তর্ভুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়ার বৃহত্তর রাস্তাও তৈরি করা, যাতে নিজেদের সক্ষমতা-অক্ষমতা নির্বিশেষে প্রত্যেকেই সুরক্ষিত বোধ করে।