কলকাতা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪:সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশে নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাইয়াছে। প্রায় প্রতিটি জেলা-উপজেলার সর্বত্র হয় সংখ্যালঘুদের হত্যা অথবা বাড়ি ঘর লুঠপাট, মন্দির ধ্বংস, নারী ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিতেছে। অনেক জায়গায় সংখ্যালঘুদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালানোর জন্য চাঁদা দিতে বাধ্য করা হইতেছে। যদিও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশমাত্র। মৌলবাদী মুসলমানরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের গনিমতের মাল হিসেবে মনে করে। তাই সেখানে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যতিক্রম ঘটে না। সবচাইতে লক্ষ্যণীয় বিষয় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামীলীগে মৌলবাদী ধর্মনিরপেক্ষতার আত্তীকরণ ঘটিয়াছে। ফলে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকিলেও সেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন অব্যাহত থাকে।কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ উদ্বাস্তু উন্নয়ন সংসদের তরফ থেকে যে বক্তব্য রাখা হয় তাতে বিমল মজুমদার বলেন ,আপনারা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির দিকে লক্ষ্য করিলে দেখিবেন যে, সেখানে বি এন পি- জামাত সহ মৌলবাদী দলগুলি “ইন্ডিয়া আউট” নামে একটি কর্মসূচি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার চালাইতেছে। এই ধরনের ঘটনাও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করে। আমরা মনে করি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একই Two Nation Theory তে বিশ্বাস করে। কেননা Two Nation Theory এর প্রথম স্লোগান পূর্ব পাকিস্তান থেকেই শুরু হইয়াছিল। তাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনেও অখন্ড ভারতের শ্লোগান ওঠে নাই। বাংলাদেশে প্রচার চালানো হইতেছে ভারত শেখ হাসিনার সরকারকে মদদ দিতেছে। তাই শেখ হাসিনা অন্যায় ভাবে ক্ষমতায় টিকিয়ে আছে। কিন্তু বাংলাদেশ তো স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। সেখানে সরকার নির্বাচন করার দায়িত্ব প্রশাসন তথা জনগণের। ভারত সরকার কখনোই কোনো সর্বভৌম দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করে বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি না। বাংলাদেশের নির্বাচনে সরকার গঠনে সংখ্যালঘুদের ভূমিকা খুবই নগন্য বিধায় এর দায় তাহাদের ওপর কোনোভাবেই বর্তায় না। তবুও সমস্ত নির্বাচনের পর বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের শিকার হইতে হইবে কেন??
গভীর দুঃখের ব্যাপার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের পত্র পত্রিকা তথা সোশ্যাল মিডিয়ায় সেরকম প্রচার পায় না। অথচ ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশ থেকে আসা অধিকাংশ উদ্বাস্তুর বসবাস এই পশ্চিমবঙ্গেই। আমরা এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি।
ভারতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের বিষয়টিকে কোনভাবেই উপেক্ষিত করা যায় না। দেখা গেছে বাংলাদেশে আশ্রয়রত রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজের সাথে লিপ্ত। ভবিষ্যতে ভারতে রোহিঙ্গারা যাহাতে গভীর কোন সংকট সৃষ্টি করিতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকা দরকার।
বিভিন্ন উদ্বাস্তু সংগঠনের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ভারত সরকার CAA বিল পাস করিয়াছে। ইহা কোনভাবেই মতুয়াদের আন্দোলনের ফসল নয়। আশা করি CAA কার্যকরী করার ফলে বাংলাদেশ থেকে আসা অসহায় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্বের ক্ষেত্রটি সুগম হইবে। আমরা দেখিতেছি যে ধর্মীয় কারণে যাহারা পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ থেকে আসিয়া ভারতে নাগরিকত্ব নিয়াছে তাহারাই CAA এর বিরোধিতা করিতেছে। তাহাদের CAA এর বিরোধিতার স্বার্থের কারণটি আমাদের বোধগম্য হইতেছে না। এমতাবস্থায় আমরা নিম্নলিখিত দাবি জানাইতেছি:
(১) বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে ভারত সরকারের দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।
(২) সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িতদের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করিতে হইবে।
(৩) নির্দিষ্ট সন-তারিখ ব্যতিরিকে অবিলম্বে CAA কার্যকরী করিয়া ভারত সরকারকে বাংলাদেশ থেকে আসা সংখ্যালঘুদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব প্রদান করিতে হইবে।
- আমাদের বিশ্বস্ত সূত্রে খবর আছে যে আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রাখিয়া বহু সংখ্যক বাংলাদেশী ভারতে অনুপ্রবেশ করিতেছে এবং গরু পাচার প্রক্রিয়াও অব্যাহত আছে