জয় ভট্টাচার্য
বসন্তের বিকেলের পড়ন্ত সূয্যিমামা তখন আস্তে আস্তে ঢলে পড়ছে পশ্চিম আকাশে। তার রঙিন লাল আভায় আলোকিত তখন গোটা মহাকাশজুড়ে। আর সেই আভার দিকেই উদাস মনে চেয়ে আছেন এক ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। প্রিয় দলের লাল-হলুদ পতাকা গায়ে দিয়ে হয়তো আকাশপানে চেয়ে চেয়ে মনে মনে ভাবছিলেন যুবভারতীর রং সোমবার এইরকম লাল হলুদ রঙের ছটায় কি সেজে উঠবে?
ম্যাচ শেষে যুবভারতীর প্রেসবক্সে বসে ওই সমর্থকের মুখটাই ফের একবার ভেসে উঠলো চোখের সামনে। সত্যিই এই ক্লাবের ওঁরাই তো মস্ত সম্বল। মহঃস্বল থেকে নিজের প্রিয় দলকে জেতাতে ছুটে যান সর্বত্র। ক্লাব জিতলে খুশিতে যেমন ভরে ওঠেন, ঠিক তেমনি ক্লাব হারলে বাড়ি ফেরেন চোখের জল ফেলতে ফেলতে।
তবে সোমবার ওই ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়নি। তাঁর প্রিয় দল আইএসএলের ম্যাচে চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে। ম্যাচের নায়ক নন্দকুমার। ফুটবলের জয়টাই শেষ কথা। সে কাজে সফল কুয়াদ্রাতের দল।
কিন্তু ম্যাচে জয় পেলেও এই ইস্টবেঙ্গল দলের হাতে গোণা দু একজন ফুটবলারকে বাদ দিলে বাকিরা পাতে দেওয়ার নয়। এই সত্যটা জানেন কুয়াদ্রাতও। কিন্তু এখন তিনি নিরুপায়। সুপার কাপ জয় করে যে আশা তিনি সমর্থকদের হৃদয়ে জাগরিত করেছিলেন তা এখন অনেকটাই ম্রীয়মান। জোড়াতালি দিয়ে দল নামাতে নামাতে এখন তিনি হাঁপিয়ে উঠেছেন।
নর্থ- ইস্ট ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও হারতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। সেই দুর্বলতা দেখে প্রথম থেকেই লাল-হলুদ রক্ষণে ঝড় তুলে গোল পেতে চেয়েছিল চেন্নাই। কিন্তু কপাল খারাপ থাকায় এ যাত্রায় বেঁচে গেল ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনে আক্রমণে ফিরে কাঙ্খিত গোল পেয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ শেষে যুবভারতীর ওই গেট দিয়ে যখন বাড়ির পথ ধরেছি, তখন আর দেখতে পাইনি ওই সমর্থককে। হয়তো হাজার সমর্থকদের মধ্যে মিশে গিয়ে মেতে উঠেছেন আনন্দে গাইছেন জার্সি মানেই আমার মা, আর তো কিছুই চাই না…