এটাই ভবিতব্য ছিল মোহনবাগানের

জয় ভট্টাচার্য

চলতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচা করে দল সাজিয়ে ছিলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কর্তারা। লক্ষ্য ছিল এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভালো ফলের পাশাপাশি আইএসএল-ও ট্রফি জয়। কিন্তু এখন এই দলটার অবস্থা খুবই করুণ। কিন্তু কেন এমন হল? আর এর জন্য কে বা কারা দায়ী, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করে দিয়েছে। এটাই স্বাভাবিক।

সমস্যাটা যদি একটু খুটিয়ে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে কোটি টাকার এই দলের সমস্যা অনেক। (১) দলের প্রথম সারির বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় থাকলেও তাঁদের বিকল্প হিসেবে রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি নয়। যার ফল মোহনবাগানকে এখন হাতে নাতে ভুগতে হচ্ছে। আনোয়ার চোট পেয়ে বাইরে যেতেই সুপার রক্ষণ পরিণত হয়েছে ভঙ্গুরে। হেক্টর, হামিলের পাশাপাশি শুভাশিষ আশিষ রাইরা অতীতের ছায়া হয়ে গিয়েছেন।
(২)‌ কামিংস, সাদিকুর ইগোর লড়াই। বুমোসের অফ ফর্ম, সাহাল চেষ্টা করলেও তিনি চোটের কারণে বাইরে। অনিরুদ্ধ থাপা দেশের জার্সি গায়ে যতটা সফল ক্লাবের জার্সিতে তার উল্টো। আনোয়ারের মতো আশিকের চোট বাগানের মিড জোন থেকে আপ ফ্রন্টকে নামিয়ে দিয়েছে মাঝারি থেকে নিম্নস্তরে। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।

(৩) বাকি যাঁরা আছেন তাঁদের মধ্যে মনবীর কিছুটা চললেও লিস্টন, গ্লেন মার্টিন্সরা ফুটবলটাই ভুলে গিয়েছেন।

এত সমস্যার পরেও কোচের দিকে আঙুল উঠছে অভিযোগের। এটাও স্বাভাবিক। কিন্তু কর্তারা কি পুরোপুরি দায় এড়াতে পারেন না। কেন রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি করা হল না। ফারদিন, সুহেল ভাট, সুমিত রাঠিদের ম্যাচ ফিট না করাটা এখন বুঝতে পারছেন তো। আর সবশেষে আছে কোচের একগুঁয়েমি। তিনি এখন যতই কাঁদুনি‌ গান দায় তাঁর ঘাড়েও বর্তাবে।
জুয়ান ফেরান্দোর জানা উচিত ছিল এটা স্পেনের ফুটবল নয়। এটা ভারতীয় ফুটবল। এখানে এক মাসেই সাফল্য পেতে হবে। না হলে বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে। বার বার ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও কেন দলকে তিন ডিফেন্ডারে খেলানো হচ্ছে। এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। এটাতো কর্তাদের বলা উচিত কোচকে। কেন এত চোট আঘাতের সমস্যা হচ্ছে তাও জানতে চাওয়া উচিত।

তবে পুরোপুরি দায় জুয়ানের ঘাড় দিয়ে এখন সতী সাজা কর্তাদের ও জানা উচিত ছিল এটা ফুটবল খেলা লুডো নয়। সুতরাং আনোয়ার ও আশিকরা চোট পেলে বাকিরা কি করছেন? এই সময় তো তাঁদেরই দায়িত্ব নেওয়া উচিত। আসলে কর্তারা ছুটেছেন নামের পিছনে। সুতরাং এই ফলটাই ভবিতব্য ছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *