প্রদীপ্ত চৌধুরী
পর্ব -সাত
একটা অন্যরকম অভিজ্ঞতার কথা বলা যাক। দেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ এসেছেন কলকাতায়। ইন্দ্রপুরী স্টুডিওয় শুটিং চলছে জি টিভির একটা হিন্দি সিরিয়ালের। assignment-টা ছিল অন্য একজনের। কিন্তু ডাকসাইটে অভিনেতাকে চোখের সামনে অভিনয় করতে দেখার লোভ সামলানো কঠিন। একদিন সকাল সকাল চলে গেলাম ইন্দ্রপুরী।
শুটিং চলছিল স্টুডিওর ফ্লোরে নয়, ছাদে। কিন্তু স্টুডিওর ছাদ অনেকটাই উঁচু হয়। খুব ছোট ছোট নুড়িপাথর বিছানো এবং কার্নিসবিহীন ছাদ। নাসির শুটিং করছিলেন ছাদের একেবারে বিপজ্জনক ধার ঘেঁষে। গায়ে কালো একটা লেদার জ্যাকেট। পায়ে হাঁটু পর্যন্ত উঠে আসা গামবুট। হাতে একটা খেলনা পিস্তল। পরিচালক ‘অ্যাকশন’ বলার সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে যাচ্ছিলেন ন্যাড়া ছাদের একেবারে প্রান্তসীমা ঘেঁষে। চোখ আমার কপালে উঠে গিয়েছিল। নুড়িপাথরে সামান্য একটু পা হড়কালেই অবধারিত মৃত্যু। নীচে ন্যূনতম প্রোটেকশনেরও ব্যবস্থা নেই। দু’একবার নয়। জীবনের চূড়ান্ত ঝুঁকি নিয়ে নাসিরুদ্দিন বেশ কয়েকবার ওইভাবে দৌড়াদৌড়ি করলেন রীতিমতো উদ্বেগহীন মুখে। সামান্য একটা সিরিয়ালের জন্য তাঁর মতো একজন ভারতবিখ্যাত অভিনেতা কেন যে ওই ঝুঁকি নিয়েছিলেন, আজও তা মাথায় ঢোকেনি। শুধু এটাই মনে হয়, এমন মনের জোর আর ডেডিকেশন না থাকলে কি আর নাসিরুদ্দিন শাহ হওয়া যায়? মনে মনে ওঁকে একটা প্রণাম জানিয়ে সেদিন স্টুডিও ছেড়েছিলাম।