সুস্বাগত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা : সাতাত্তরে পদচিহ্ন ভারতের স্বাধীনতার। স্বাধীনতা না নেহেরু জমানার কাছে ক্ষমতার হস্তান্তর তা নিয়ে তর্ক বিতর্ক যতই করি না কেন-; প্রকৃত সত্য ইতিহাস জানে।একটা প্রজন্ম সেই সত্য উদঘাটন করবে।তবে ইতিহাস দেশের কয়েকটি ঐতিহাসিক দিনে নিজের দেশপ্রেমের বিবেককে যন্ত্রণার মুখে দাড় করিয়ে দেয়।মনীষীরা বলেছেন বলে লম্বা বহরের বক্তৃতায়।জনগনের সেবা,মেহনতা বিপ্লবের গালভরা গল্প বলি।দুর্নীতির পালঙ্কে শুয়ে শ্মশানের বৈরাগ্য। অথচ পরাধীনতার অন্ধ কারাগারে বৈরাগ্য, কৃচ্ছতায় বৃটিশের পাশবিক অত্যাচারে মৃত্যু , ফাঁসির দড়ি যারা গলায় পড়েছিল।এটাই বোধ হয় ইতিহাসের তামাশা।এই তামাশা প্রবঞ্চণা বিপ্লবীদের মধ্যে ছিল না বলে স্বাধীনতার দিনে তাদের স্মরণ করে নিজের বিবেকের কাছে নিজেরা আত্মশ্লাঘা বোধের চেষ্টার করি।তবুও স্বাধীনতা দিবস মনে করিয়ে দেয় মানব মুক্তির জন্য তাদের আত্মশক্তির বলিদান।
শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ ভারতে অধ্যাত্ম জাতীয়তাবাদের আদর্শে বৃটিশ পরাধীনতা মুক্ত প্রলেতারিয় বিপ্লব করতে চেয়েছিলেন। এই স্বরাজ ভাবনার নির্দেশ পেয়েছিলেন তাঁর ইষ্টগুরু শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের দেবের কাছ থেকে। ৭৭-এর স্বাধীনতার প্রজন্মের কাছে ভাবের বাতুলতা মনে হয়ত হতে পারে। কিন্ত ব্রিটিশ গোয়েন্দা অফিসার টেগার্ট তাঁর রিপোর্টে লিখেছে,মহারাষ্ট্রে বরোদায় এম.ভি. যাদবের বাড়িতে ১৯০৫ সালে ভাড়া থাকার সময় প্ল্যনচেট করতেন। আশ্বিন মাস, রাত ১০.০০টা।অরবিন্দ ঘোষ, বারীন ঘোষ, এবং কয়েকজন দেশপ্রেমিক মারাঠা যুবকদের নিয়ে দড়জা বন্ধ করে দিলেন। সামনে টেবিল, টেবিলের ওপর কাগজ এবং পেন্সিল। সবাই প্রার্থনা করছে। এমন সময় শ্রী অরবিন্দ-র হাত কেঁপে উঠল। তাঁর মধ্যে এক অদ্ভুত অনুভূতি। অন্যান্যদের চোখ খুলে গেল। দেখল,অরবিন্দ দু ঘন্টা ধরে দ্রুত হাত চালিয়ে
লিখে চলছেন।একজন জিজ্ঞেস করল, কে এসেছেন এই অন্ধকার ঘরে ? অরবিন্দ বললেন, তাঁর ডাকে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ঐশ্বরিক আত্মা এসেছিলেন। দেশ জাতির মুক্তি কিভাবে সম্ভবপর হবে।শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ভাবমুখের উপদেশ অরবিন্দের কলমে ১)জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, ২)ইংল্যান্ডে গিয়ে অস্ত্র নির্মাণ শিক্ষা, ৩)বিপ্লবের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্ম এবং প্রচার। এই উদ্দেশ্যে শ্রী অরবিন্দ ঘোষ ভবানী মন্দির প্যামপ্লেট প্রকাশ করে শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের শক্তিত্ত্বর প্রচার শুরু করলেন।১৫২ বর্ষের জন্মদিনে এই বিপ্লবী মনীষার রাতুল চরণে সভূমিষ্ট প্রনাম ।